সুরা দুহা অনুধাবন

কিভাবে সুরা আদ দোহা আপনার জীবন বদলে দিতে পারে??

সব থেকে উওম উপায়ে আপনার হৃদয়ে ভালো অনুভব করার উপায় হচ্ছে সুরা আদ দোহা পড়া। কারণ এই সুরা কোরআনের সব থেকে আকর্ষনীয় সুরা এই কারনে যে এই সুরা আপনাকে
পজেটিভ হতে এবং আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা সম্পর্কে ভালো চিন্তা করতে শেখায়।

আমি কি আপনাদের এই সুরার অর্থ বলতে পারি? হয়তো আপনি এটা আগে শোনেননি।

সুরা দোহা এমন এক সময় নাযিল হয়েছিলো যখন হযরত মোহাম্মাদ সা: ছয়মাস কোনও ওহী পান নাই আল্লাহর কাছ থেকে। জিব্রাইল আলাইহিস সালাম আসেন নাই এবং কোন স্বপ্নও দেখেন নাই ।

ঠিক একইভাবে হযরত মোহাম্মাদ সা: ছয়মাস কাটিয়েছেন।তিনি মনে করেছেন আল্লাহ সুবহাহুতায়ালা তাঁকে পছন্দ করছেন না। তিনি মনে করেছেন আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা তাঁকে নবী হিসাবে আর চাচ্ছেন না। সব চিন্তা রাসুল সা: মাথায় চলে এসেছিলো।

আল্লাহ কি বলেছিলেন ? আল্লাহ বলেছিলে
ওদ্দোহা – শপথ আলোক উজ্জল মধ্যদিনের ।

(তাই কোন হতাশ ব্যক্তিকে আপনি সর্বপ্রথম একথা বলবেন জেগে উঠো এবং সুর্যের আলো দেখো ইহা সর্বনাশ এবং হতাশার দিন নয় বাইরে কি সুন্দর সুর্যের আলো সুন্দর জীবন )

ওয়াল্লাইলি ইযা সাজা – কসম রাতের যখন তা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়।

(ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষদের দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে তারা রাত জাগে ।তারা ঘুমায় সকালে আর রাতে জেগে থাকে তাই সবকিছু অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাদের খারাপ সময়ে ঘুম আর ঘুম থেকে উঠার প্যাটার্ন )

মা অদ্দা‘আকা রব্বুকা অমা- ক্বলা- তোমার রব তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং অসন্তুষ্টও হননি

(আল্লাহ তোমাকে অপছন্দ করেন না হে নবী এবং আল্লাহ ভুলেও যান নি ।আল্লাহ আমাদেরকে অপছন্দ করেন না)

অলাল্ আ-খিরাতু খাইরুল্লাকা মিনাল্ ঊলা – আর অবশ্যই তোমার জন্য পরবর্তী সময় পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে উত্তম হবে

অলাসাওফা ইয়ু’ত্বীকা রব্বুকা ফার্তাদ্বোয়া –
আর শীগ্রই তোমার রব তোমাকে দান করবেন, ফলে তুমি সন্তুষ্ট হবে।

( ও মুসলিমিন খুব শীগ্রই আল্লাহ আমাদেরকে জান্নাত দিবেন ইনশাআল্লাহ এবং আমাদেরকে খুশী করে দিবেন । খুব শীগ্রই আল্লাহ আমাদেরকে বিজয় দান করবেন সবকিছুতে এবং আমাদের খুশি করে দিবেন। আল্লাহ কথা দিয়েছেন খুব শীগ্রই জান্নাতে যাবো ইনশাআল্লাহ । এটা কি সবথেকে সুন্দর বিষয় নয় যে এরকম একজনকে বলা, যার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এরপর আল্লাহ একটা কারন দিয়েছেন এটা বিশ্বাস করার । তিনি বলেছেন

আলাম্ ইয়াজ্বিদ্কা ইয়াতীমান্ ফাআ-ওয়া-
তিনি কি তোমাকে ইয়াতীম অবস্থায় পাননি? অতপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন

অওয়াজ্বাদাকা দ্বোয়া-ল্লান্ ফাহাদা-
আর তিনি তোমাকে পেয়েছেন পথ না জানা অবস্থায়।। অতঃপর তিনি পথনির্দেশ দিয়েছেন।

(ভাই বোনেরা আমরা কি মিসগাইডেড ছিলাম না প্রাকটিসিং হওয়ার আগে? আমি জানি আমি নিজে কখনো নামায পড়তাম না আমি আমার দ্বীন সম্পর্কে জানতাম না। আল্লাহ কি আমাকে মিসগাইডেড পান নাই এবং গাইড করেন নি?ঠিক একইভাবে আপনি যখন মিসগাইডেড হবেন আল্লাহ গাইড করেন )

অওয়াজ্বাদাকা ‘আ-য়িলান্ ফাআগ্না-
তিনি তোমাকে পেয়েছেন নিঃস্ব অতঃপর তিনি সমৃদ্ধ করেছেন

(আল্লাহ হতাশার প্রতিষেধক দিলেন । আপনি কি জানেন এটা কি ? একজন ডিপ্রেসড ব্যক্তি নিজেকে নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকে । আর ডিপ্রেশন এবং আল্লাহর কাছ থেকে দুরে সরে যাওয়ার অনুভুতি থেকে বের হয়ে আসার উত্তম উপায় হলো সেইসব মানুষের কথা স্বরণ করা যারা আপনার চেয়ে আরো অনেক বেশি সমস্যায় জর্জরিত)

ফাআম্মাল্ ইয়াতীমা ফালা-ত্বাকহার –
সুতরাং তুমি ইয়াতীমের প্রতি কঠোর হয়ো না।

অআম্মাস্ সা-য়িলা ফালা-তানহার –
আর যে তোমার কাছে কিছু চায় তাকে না বলোনা

(তাই আল্লাহ আমাদের দুই ধরনের মানুষের কথা স্বরণ করতে বলেছেন এক – ইয়াতীম এবং দুই – ভিক্ষুক । ইয়াতিমের দিকে চেয়ে দেখ তার দেখাশোনার কেউ নেই কিন্তু আপনার মা বাবা আছেন দেখাশোনার জন্য। ভিক্ষুকের কোন খাদ্য নেই সে আপনার কাছে খাদ্য চাচ্ছে এবং এমনকি উপোস ঘুমাতে যাচ্ছে । আমাদের মধ্যে কি কেউ কখনো উপোস ঘুমাতে গিয়েছিলাম ? সুবহানাল্লাহ ।

এবং আল্লাহর কাছ দুরে সরে যাওয়ার অনুভব থেকে বেরিয়ে আসার সর্বশেষ পথ হচ্ছে

অ আম্মা-বিনি’মাতি রব্বিকা ফাহাদ্দিছ –
আর তোমার রবের অনুগ্রহ তুমি বর্ণনা কর।

( আলহামদুলিল্লাহ চোখের জন্য
আলহামদুলিল্লাহ হাত দুটির জন্য
আলহামদুলিল্লাহ আমার মুখের জন্য
আলহামদুলিল্লাহ আমার হার্টের জন্য

যদি আল্লাহ আমাদের ভালো না বাসতেন তাহলে কেন আমাদেরকে এখনো জীবিত রেখেছেন?

যদি আল্লাহ আমাদের পছন্দ না করতেন তাহলে কেন আমাদের খাদ্য দিচ্ছেন যার কারনে আমরা প্রতিমুহুর্ত বেঁচে আছি?

যদি আল্লাহ আমাদের পছন্দ না করতেন তাহলে আজ আমরা কেন এখানে জ্ঞান শেয়ার করছি এবং জানতে পারছি আল্লাহর ভালোবাসা সম্পর্কে?

পরবর্তী সময় যখনই বিচ্ছিন্ন বোধ করবেন তখনই সুরা দোহা পড়বেন। এবং অনুভব কররেন সেরকম ভালোবাসা যেরকম রাসুল সা: পেয়েছিলেন আল্লাহর কাছ থেকে। খুবশীগ্রই আল্লাহর ওয়াদা সত্য হবে ইনশাআল্লাহ ।

Sufyan al-Thawri খুব সুন্দর একটি কথা বলেছেন

রোজ হাশরের দিন আমার জন্মদাত্রী মা বাবা আমার বিচার করবেন না। বিচার করবেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। আর আমি আমার মা-বাবার মমতার তুলনায় মহান আল্লাহ পাকের রহমতের প্রতি অনেক বেশি আস্থাশীল।

সুতরাং আপনি যদি বিশ্বাস করেন আল্লাহ আপনাকে আপনার মা বাবার চেয়ে বেশি ভালবাসেন তাহলে আল্লাহ আপনাকে আপনার বাবা মায়ের চেয়ে বেশি ভালবাসবেন।

আপনি যদি বিশ্বাস করেন আল্লাহ সব গোনাহ মাফ করতে পারেন তাহলে আল্লাহ আপনার সব গোনাহ মাফ করে দিবেন ইনশাল্লাহ ।