সওম কাকে বলে?

সাওম শব্দটির বহুবচন সিয়াম।

ফারসিতে সাওমকে রোজা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

ফারসি ভাষায় অধিকাংশ ইবাদতের শব্দ বাংলায় হুবহু ব্যবহার হয়ে থাকে।

বাংলায় সাওম শব্দের অর্থ বিরত থাকা বা থেমে যাওয়া!

ইংরেজিতে সাওমের শাব্দিক অর্থ ব্রেক অর্থাৎ থামিয়ে দেয়া।

ইসলামের পরিভাষায় সাওম তথা সিয়াম শব্দের অর্থ সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব রকম পানাহার, যৌনকর্ম ও সকল রকম মিথ্যাচার তথা অপকর্ম থেকে নিজকে দূরে সরিয়ে রাখার নাম সিয়াম সাধনা।

এ মর্মে মহান রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴿البقرة: ١٨٣
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (২: ১৮৩)

রমজানের সাওমের বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত তাৎপর্যময়।

পবিত্র কুরআনুল কারীমে এ মর্মে ঘোষণা করা হয়েছে-

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
রমজান মাস, এ মাসেই কুরআন নাজিল করা হয়েছে। (সূরা আল বাকারা আয়াত-১৮৫)

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেন,

فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ
অতএব এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে তার জন্য এ সম্পুর্ণ মাসটি সাওম পালন করা অপরিহার্য

(সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৫)

স্বাভাবিক কারণেই নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত প্রদর্শিত হয়। কিন্তু রোজা কোনোরূপ প্রদর্শন ছাড়াই নীরবে-নিভৃতে পালন করা যায়। রোজার গোপনীয়তা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ইচ্ছাধীন। এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রোজার জন্য বিশেষ প্রতিদানের ঘোষণা দিয়েছেন।

হাদিসে কুদসির বর্ণনা অনুযায়ী

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেন,

الصوم لي وانا اجزي به
সাওম আমার জন্যই রাখা হয় আর আমি স্বয়ং নিজে এর প্রতিদান দেবো (সহিহ আল বুখারি)।

আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ঘোষণা করেন,

وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ ﴿البقرة: ١٨٥
আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে সাওম পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা সাওম পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(২: ১৮৫)
আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধিতা, ধৈর্য ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম প্রধান উপায় রোজা। এ ইবাদতের মাধ্যমেই মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সম্ভব হয়। আল্লাহভীতি বা তাকওয়া অর্জন এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনেও সাওম বা রোজা অপরিহার্য ও অনিবার্য ইবাদত। মানুষের নৈতিক উন্নয়ন ও দৈহিক শৃংখলা বিধান, পারস্পরিক সম্প্রীতি-সহানুভূতি এবং সামাজিক সাম্য ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও সাওম বা রোজার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মহানবী (সা.) ঘোষণা করেন,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ، فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবী (সা.) বলেছেন,

সাওম অবস্থায় কেউ যদি মিথ্যা কথা বলা ও তদনুযায়ী কাজ করা পরিত্যাগ না করে তবে তার শুধু খাদ্য ও পানীয় পরিত্যাগ করায় (সাওম পালনে) আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই

(সহিহ আল বুখারি,১৯০৩)।

সাওমের গুরুত্ব আনুধাবন ও রামাদানের প্রস্তুতি

নেওয়ার জন্য আমাদের

” ramadan Prepration “

কর্মশালা তে অংশ গ্রহন করুন ।।