কুরআন অবশ্যই বুঝে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। এটা আল্লাহ তাআলার বাণী। কুরআন বোঝার চেষ্টা না করে শুধুই পড়ে যাওয়া কখনোই ঠিক না। এখন, আপনি চেষ্টা করেছেন বোঝার, কিন্তু সবকিছু বুঝতে পারছেন না, তাই আরবিতে পড়ছেন —সেটা আল্লাহ গ্রহণ করবেন। সেটার জন্য আপনি পুরস্কার পাবেন। কিন্তু আপনি বোঝার চেষ্টাই করেন না, সেটা কখনো কি সওয়াব দেবে ? কুরআন যদি বুঝে পরার চেষ্টা না-ই করি, তাহলে তো কুরআন কোনো ‘বাণী’ হলো না। পুরো কুরআন পাঠানোর কোনো কারণই ছিল না। শুধু আলিফ-লাম-মীম হলেই চলত।
.কুরআনের প্রতিটি অক্ষরের জন্য দশটা সওয়াব পাওয়া যায়। তাহলে পুরো কুরআনের কী দরকার? সারাদিন আলিফ-লাম-মীম, আলিফ-লাম-মীম, আলিফ-লাম-মীম..পড়তে থাকবেন, ব্যস, অনেক সওয়াব পেয়ে গেলেন। পুরো কুরআনের তাহলে কী দরকার? আছে কোনো দরকার? সওয়াব পাওয়ার জন্য কি আলিফ-লাম-মীম যথেষ্ট না? আপনি যদি সত্যিই মনে করেন কুরআনের প্রতিটা অক্ষর পড়লেই দশ নেকি পাওয়া যায়, তাহলে কুরআন পড়ে শেষ করার কী দরকার? আলিফ-লাম-মীম হলেই তো চলে? এমনকি, শুধু আলিফ হলেই তো যথেষ্ট। দিন-রাত শুধু আলিফ, আলিফ করতে থাকবেন, প্রতিটা আলিফ-এর বিনিময়ে দশটা নেকি পাবেন। ব্যস। বাকি কুরআনের তাহলে কী দরকার?
কুরআনে দেখেন না যে, কতবার আল্লাহ বলেছেন যে, তিনি বিভিন্নভাবে উদাহরণ দেন যেন আমরা বুঝতে পারি? তিনি বার বার আমাদেরকে চিন্তা করতে, বুঝতে বলেন? পৃথিবীতে এমন কোনো বই পাবেন না, যেখানে বার বার পাঠককে বলা হয়েছে “চিন্তা করো”, “বোঝার চেষ্টা করো”। কুরআন হচ্ছে একমাত্র কিতাব যা আমাদেরকে বার বার প্রশ্ন করে, “কেন তোমরা বোঝনা, কেন তোমরা চিন্তা করো না?”
কুরআন কোনো যাদু-মন্ত্রের বই নয় যে, কিছু না বুঝে তিলাওয়াত করলেই হবে। কুরআনের উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে এটি একটি নির্দেশনামালা। আপনি যদি নির্দেশনামালা না বোঝেন, তাহলে কি আপনি কখনো নির্দেশ মানতে পারবেন? আপনি ড্রাইভিং করতে চান।আপনি এক বিজাতীয় ভাষায় লেখা ড্রাইভিং-এর বই কিনে পড়তে থাকলেন, যার কিছুই বোঝেন না। আপনি কি ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশ করবেন?কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা ঈমানের কারণেই হয়। আপনি কিভাবে সেই বিষয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করবেন যে বিষয়ে আপনি জানেন না? এজন্য আল্লাহ কুরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা না করাকে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
“তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না, নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা দেয়া আছে?”